১৯৫৯ সালের এক রৌদ্রজ্জল প্রভাতের কথা। এলাকার জনগণ হঠাৎ আবিস্কার করে, নদীর বুকে একখন্ড ভূমি। শুরু হয় অথৈ সাগরের বুকে জেগে উঠা মাটির বুকে বসতি পত্তন। জেগে উঠা নতুন চর দক্ষিণাঞ্চলের সহায় সম্বলহীন নদীভাঙ্গা দরিদ্র মানুষগুলোকে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখায়। অগণিত ভাগ্যান্বেষী মানুষ এসে বসত গড়ে নতুন নোনা পানির সাম্রাজ্যে। স্বল্প বাসনার এ চরকে ঘিরে তারা নিজেদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুনতে শুরু করে । স্বপ্ন দেখে নতুন জীবন ও জীবিকার । এ স্বপ্নই প্রকৃতির নানা প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে টিকে থাকার প্রেরণা জোগায়। সেই দিন থেকে শুরু হয় নতুন ইতিহাস। বেঁচে থাকার শেষ অবলম্বনটুকু রক্ষার জন্য তাদেরকে প্রকৃতির পাশাপাশি বাইরের শক্তির সাথেও লড়াই করে টিকে থাকতে হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৮ সালে জমি নিয়ে সংঘর্ষ বাধে বহিরাগত ভুমিগা্রসী শক্তির সঙ্গে। সংঘর্ষের ফলে নিহত শত শত মানুষ এবং হাজার হাজার ঘর বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। সূবর্ণ্চর উপজেলার সাধারন মানুষ সেদিন নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য অনেক মূল্যবান জীবন বির্সজন দেয়। এ উপজেলার ইতিহাস রচিত হয়েছে খেটে খাওয়া সাধারন মানুষের নিরন্তন সংগ্রামের মধ্যদিয়ে যারা তাদের সৃজনশীল কর্মকান্ড দিয়ে এ নোনা চরকে বসবাস উপযোগী করে গড়ে তুলেছে। যা বর্তমানে সূবর্ণচর উপজেলা হিসেবে পরিচিতি অর্জন করে স্ব-গৌরবে মাথা তুলে আছে।
সুবর্ণচর উপজেলা নোয়াখালী জেলার একটি নবসৃষ্টি উপজেলা। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগের ০২ এপ্রিল ২০০৫ তারিখের প্রজ্ঞাপন জারীর মাধ্যমে এ উপজেলার গোড়াপত্তন ঘটে। নিকার এর ৯১তম বৈঠকে নোয়াখালী সদর উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে এ উপজেলার সৃষ্টির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ উপজেলার উত্তরে নোয়াখালী সদর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে কোম্পানীগঞ্জ ও চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলা দক্ষিণে হাতিয়া এবং পশ্চিমে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলা। এটি প্রায় ২২ঁ৩৮র্ ও ২২ঁ৪৫র্ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১ঁ২০র্ ও ৯০ঁ৫৮র্ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। জেলা হতে উপজেলা সদরের দুরত্ব প্রায় ২৩ কিঃ মিঃ উপজেলার মোট আয়তন ৫৭৬.১৪ বর্গ কিঃ মিঃ। যার মধ্যে জরীপ বহির্ভূত চরাঞ্চল এলাকা ১৯৬.৫৩ বর্গ কিঃ মিঃ। ২০০১ সনের আদমশুমারী অনুযায়ী মোট জনসংখ্যা ১,৮৮,৯৮২ জন। নবগঠিত ভূমিরূপের অপরূপ সৌন্দর্য রয়েছে এ উপজেলায়। যার বিস্তৃতি বনভূমিপূর্ণ দীর্ঘ সমুদ্র উপকূল।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস